নাটোরে দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির ঘটনা ৪ হাজার টাকায় দফারফার অভিযোগ
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
নাটোরের সিংড়ায় দ্বিতীয় শ্রেণির এক শিশু শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির পর ৪ হাজার টাকায় রফাদফার অভিযোগ উঠেছে। রোববার গভীর রাতে বৈঠক শেষে অভিযুক্তের জামাইয়ের ভগ্নিপতি হাসেন আলীর বাড়িতে এই রফাদফার ঘটনা ঘটে। ৯ সদস্যর শালিসী বোর্ডের সিদ্ধান্তে জরিমানার ৪ হাজার টাকার মধ্যে ৩ হাজার টাকার মিষ্টি বিতরণ করা হয়। এ সময় স্থানীয় ইউপি সদস্য জাফর ইকবাল বাবু, গ্রাম প্রধান মতলেব আলী, ওয়াজেদ আলীসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা উপস্থিত ছিলেন। সিংড়া থানা পুলিশ ও লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, যৌন হয়রানির শিকার এই শিশু শিক্ষার্থীর বাড়ি সিংড়া উপজেলার ভাগনাগরকান্দি গ্রামে। সে স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ালেখা করে। ২৯ অক্টোবর রোববার দুপুর সাড়ে ১২ টায় স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পর একই গ্রামের সেলিম হোসেনের শ্বশুর আফসার আলী (৭০) শিশু শিক্ষার্থীকে মুখ চাপিয়া ধরে শয়ন ঘরে নিয়ে যৌন হয়রানির চেষ্টা করে। এ সময় শিশুটির চিৎকারে তার ফুফু মজিদা বেগমসহ গ্রামবাসী ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে। এ সময় যৌন হয়রানিকারীকে সকলে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। তবে অভিযুক্তের ছেলে সোহেল ও জামাই সেলিম এসে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। পরে রাতেই অভিযুক্তের জামাই সেলিমের ভগ্নিপতি হাসেন আলীর বাড়িতে স্থানীয় ইউপি সদস্য জাফর ইকবাল বাবু’র পরিচালনায় শালিসী বৈঠকে ৪ হাজার টাকা জরিমানা করে ওই টাকার মিষ্টি বিতরণ করা হয়। আর আফসার আলীকে জুতার মালা দিয়ে এক পাক ঘুরিয়ে শিশু যৌন হয়রানির বিচার সমাপ্ত করেন গ্রাম্য মাতবররা। শিশু শিক্ষার্থীর বাবা আতা মিয়া ও মা আকলিমা বেগম বলেন, তাদের শিশু কন্যাকে দাদির কাছে রেখে তারা দুইজনই নাটোর শহরের একটি ব্রয়লারে শ্রমিকের কাজ করেন। শিশুটি দাদির কাছেই থেকে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে। এই ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্তরা বিভিন্ন ভাবে তাদেরকে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন এবং জোড় করে একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে। স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তুহিন উদ্দিন বলেন, ২৯ অক্টোবর ওই শিক্ষার্থী স্কুল শেষে বাড়ি চলে যায়। এরপর থেকেই গত ৩দিন সে আর স্কুলে আসে নি। স্থানীয় ইউপি জাফর ইকবাল বাবু বলেন, এক বৃদ্ধ লোক খারাপ মন-মানসিকতা নিয়ে বাড়িতে ঢুকে মেয়েটিকে খারাপ কাজ করা চেষ্টা করেছিল। পরে সামাজিক ভাবে এটা মিমাংসা করা হয়েছে। শালিসে অভিযুক্তকে জুতা মাথার উপর দিয়ে গ্রামে ঘুরানো হয়েছে। অভিযুক্তক আফসার আলীকে তাবলীগে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। আর শালিসী বৈঠক তিনি পরিচালনা করলেও গ্রাম প্রধানদের সম্বনয়ে ৯ সদস্য বোর্ড এর মতলেব আলী এই রায় প্রকাশ করেছেন বলে জানান তিনি। সিংড়া থানার ওসি মনিরুল ইসলাম জানান, ১নভেম্বর এ বিষয়ে তিনি একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।